৭৭ বছর বয়সের তরুণীর আগমন ৬৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসব

MEn || বয়স গুনে গুনে ৭৭। সত্যি কথা বলতে গেলে, আমাদের দাদি-নানিদের বয়স। কিন্তু এই বয়সেও মানুষ এমন মোহনীয় থাকেন কী করে? মুখে বলিরেখা দৃশ্যমান। কিন্তু সোনালী চুল আর ধূসর সবুজ চোখ এখনো যথেষ্ট উজ্জ্বল। গলার বড়সড় সোনালী নেকলেসটা হয়তো গলার ভাঁজ লুকানোর জন্যই। তাঁর ব্যক্তিত্ব আর সদর্প উপস্থিতির কাছে সেসব তুচ্ছ। ঝকমকে নীল গাউনে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। এরইমধ্যে তিনি ঢুকে পড়েছেন লালগালিচার সেরা পোশাক পরিহিতাদের বিবিধ তালিকায়ও। অবাক কাÐ তো বটেই।
এই বয়সে এমন উজ্জ্বলই বা থাকা যায় কীভাবে? যৌবন বা তারুণ্য মানে তাঁর কাছে আসলে কী? জেন ফন্ডাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। জবাবে দুবারের অস্কার বিজয়ী হলিউড কিংবদন্তি বলেন, মানুষ তখনই বুড়ো হয়, যখন সে তার জীবনের মানে হারিয়ে ফেলে। তার জীবনে “প্যাশন” বা তাড়না বলতে কিছু থাকে না। আমার মনে হয়, এখনো আমি যথেষ্ট প্যাশনেট। আর আমি কাজ করে যেতে চাই।
একসময় হলিউড সিনেমা দুনিয়ায় দাপিয়ে বেড়িয়েছেন অভিনয়প্রতিভা আর ব্যক্তিত্বের শক্তিতে। জেন ফন্ডা এখনো এমন এক হলিউড মহাতারকার নাম, যিনি মাতিয়ে দিতে পারেন যেকোনো উৎসব। কান উৎসবেও হয়েছে তাই। তাঁর বিখ্যাত ছবির মধ্যে আছে বারবারেলা, পিরিয়ড অব অ্যাডজাস্টমেন্ট। ক্লুট ও কামিং হোম ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি জিতেছিলেন অস্কার।
ইয়ুথ ছবিতে জেন ফন্ডার চরিত্রের দৈর্ঘ্য খুব ছোট। চরিত্রটি হতাশাগ্র¯Í এক হলিউড অভিনেত্রীর। হৃত যৌবনা এই অভিনেত্রী মনে করেন, সিনেমা তাঁর জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছু। শেষবেলায় এসে টেলিভিশন ধারাবাহিকই বরং তাঁর জীবিকার জন্য বেশি জরুরি। ছোট চরিত্র, কিন্তু গভীরতার দিক দিয়ে অনেক বড়।
মাইকেল কেইন, হার্ভে কেটেল আর র‌্যাচেল ভাইসের পাশাপাশি ইয়ুথ ছবির বড় আকর্ষণ জেন ফন্ডাও। পাওলো সরেন্তিনোর ‘মাস্টার পিস’: নিমেষের জন্য ঝিমিয়ে পড়তে যাচ্ছিল উৎসব। ঠিক মাঝামাঝি দিনে এসে নাকি এমনটাই হয়। ঝিমিয়ে পড়তে যাওয়া উৎসবকে যেন গা ঝাড়া দিয়ে আবার জাগিয়ে তুললেন পাওলো সরেন্তিনো। তারুণ্য আর যৌবনের শক্তিতে। ইটালিয়ান এই পরিচালকের এবারের কান উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে থাকা ছবির নাম ইয়ুথ।
আশি ছুঁই ছুঁই দুই বৃদ্ধের গল্প। ফ্রেড ও মাইক নামের এই দুই ইয়ার দো¯Í গেছেআল্পসের কোলে এক অবকাশ যাপন কেন্দ্রে, ছুটি কাটাতে। ফ্রেড একজন নামজাদা সুরকার আর মাইক বর্ষীয়ান নির্মাতা। দুই বুড়োর একাকী জীবনের গল্প ভেবে এই ছবিকে যদি কেউ পাশ কাটিয়ে যেতে চান, তবে সেটা হবে মহা ভুল।
সরস সংলাপ, অসাধারণ সংগীত আর তীব্র জীবনবোধের এক অসাধারণ ছবি ইয়ুথ। ইটালিয়ান পরিচালক সরেন্তিনো অস্কার জিতেছেন আগেই। এবার এই ছবিকে এরইমধ্যে দেখা হচ্ছে তাঁর জীবনের আরেক ‘মাস্টার পিস’ হিসেবে। ইয়ুথ ছবি যদি স্বর্ণ পামের দৌড়ে এগিয়ে না থাকে, তাহলেই বরং অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার হবে।
আরও যত সিনেমা: ইয়ুথ ছাড়াও কাল সংবাদ সম্মেলন ছিল জিয়া ঝ্যাং কে পরিচালিত শান হি গু রেন ছবির। চীনের এই ছবিটি আছে উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে। কাল উৎসবে প্রদর্শিত অফিশিয়াল সিলেকশন বিভাগের অন্যান্য ছবির মধ্যে ছিল ম্যাডোনা, তাকলুব এবং ল্যাম্ব। গভীর রাতে প্রদর্শিত হওয়ার কথা গেসপার নোয়ের বহুল প্রতীÿিত ছবি লাভ। উৎসবে ধ্রুপদি বিভাগে দেখানো হয়েছে প্রায়শ সর্বকালের সেরা ছবি হিসেবে স্বীকৃত সিটিজেন কেইন।

Comments

Popular posts from this blog

ভালোবাসাই যথেষ্ট নয়'তে তারা তিনজন

দেবের সাথে কাজ করবেন মিষ্টি

ম্যাগাজিনে হট নার্গিস ফাখরি